Bengali Meaning of An Astrologer's Day by R.K Narayan , Bengali Meaning :An Astrologer's Day ,An Astrologer's Day er bangla mane ,

Bengali Meaning of An Astrologer's Day by R.K Narayan
Bengali Meaning :An Astrologer's Day 

An Astrologer's Day এর বাংলা মানে ,


CLASS XI (NEW SYLLABUS 2024-2025 )

Our Telegram Group


দুপুরবেলা যথাসময়ে তিনি তাঁর ঝুলিটি খুলে পেশাগত সরঞ্জামগুলি পেতে ফেললেন, যার মধ্যে ছিল এক ডজন কড়ি, আবছা ও দুর্বোধ্য ছক আঁকা চৌকো এক টুকরো কাপড়, একটি নোটবই এবং এক তাড়া তালপাতার পুঁথি। 

তাঁর কপালে জ্বলজ্বল করছিল পবিত্র ভস্ম ও সিঁদুর, এবং তাঁর চোখে একটা অস্বাভাবিক উজ্জ্বল ঝিলিক যা আসলে তাঁর চোখে এসেছিল ক্রমাগত খরিদ্দরের সন্ধান করতে করতে, অথচ তাঁর সরল মক্কেলরা সেটাকে ঐশ্বরিক দীপ্তি ভেবে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত। 


তাঁর চোখগুলির দীপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছিল অঙ্কিত ললাট ও চিবুক পর্যন্ত বিস্তৃত গোঁফের মধ্যে অবস্থানের কারণে: কোনো অপেক্ষাকৃত কম বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরও চোখের অবস্থান এরকম হলে তাকেও বিজ্ঞ বলেই মনে হবে। 

আরও বেশি চমকপ্রদ প্রভাব বিস্তারের জন্য তিনি তাঁর মাথায় একটি গেরুয়া রঙের পাগড়ি জড়িয়ে রেখেছেন।

 এই রঙের সংমিশ্রণ তাঁকে কখনও নিরাশ করেনি। 

মানুষ কসমস বা ডালিয়া দ্বারা আকৃষ্ট মৌমাছির দলের মতো ঝাঁকে ঝাঁকে তাঁর দিকে অগ্রসর হত। 

তিনি বসেছিলেন একটি তেঁতুল গাছের প্রসারিত শাখার নীচে যার পাশ দিয়ে একটি রাস্তা টাউন হল উদ্যান বরাবর চলে গিয়েছিল। 


বিভিন্ন দিক দিয়ে এই স্থানটির গুরুত্ব অপরিসীম: সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় সবসময় এই সরু রাস্তাটি লোকজনের ভিড়ে গমগম করত বিভিন্ন প্রকার ব্যাবসায়িক কর্ম ও বিভিন্ন পেশার মানুষের উপস্থিতি পুরো রাস্তা জুড়ে লক্ষ করা যেত।

 ওষুধ বিক্রেতা, চোরাই লোহালক্কর ও পুরোনো মালপত্রের বিক্রেতা, জাদুকর এবং সর্বোপরি একজন সস্তা জামাকাপড়ের নিলামদার যে সমস্ত দিন ধরে সারা শহরের লোকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কানে তালা লাগানো চিৎকার করতে থাকত। 

তার পরের উচ্চকণ্ঠের হল্লাকারী ছিল একজন ভাজা বাদাম বিক্রেতা, যে তার পসরাকে এক একদিন এক একরকম অভিনব নামে আখ্যায়িত করত, কোনোদিন বলত বোম্বের আইসক্রিম এবং পরদিন হয়তো দিল্লির বাদামশাঁস, আবার তৃতীয় দিন হয়তো বলত রাজা-মহারাজাদের সুখাদ্য, ইত্যাদি ইত্যাদি, এবং লোকে তার কাছে ভিড় জমাত।

 এই ভিড়ের বেশ খানিকটা অংশ ওই জ্যোতিষীর সামনে গিয়েও ঘুরঘুর করত। জ্যোতিষী তাঁর ব্যাবসায়িক কাজকর্ম চালাত একটি মশালের আলোয় যা চড়চড় শব্দ করতে করতে এবং ধোঁয়া উদ্গিরণ করতে করতে নিকটবর্তী বাদামের খোলার স্তূপের উপর জ্বলত। 

পৌরসভার আলোর সুবিধা না থাকা এই জায়গাটির জ্যোতিষীর জন্য শাপে বর হয়েছিল এবং তার রহস্যময়তাকে বাড়িয়ে তুলেছিল। 


জায়গাটি আলোকিত হত পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দোকানের আলোর দ্বারা।


 দু-একজনের ছিল হ্যাজাকের আলো, কারোর আবার লাঠির উপর জ্বালানো মশাল, কয়েকজন পুরোনো সাইকেলের বাতি দিয়ে আবার জ্যোতিষীর মতো দু-একজন নিজেদের আলো ছাড়াই কাজ চালিয়ে নিত। আলোর ছটা এবং চলমান ছায়া মিলেমিশে একটি বিভ্রান্তিকর স্থান ছিল এটি।


 এই বিভ্রান্তিটি জ্যোতিষীর জীবনের সাথে মানানসই ছিল, এর সহজ কারণটি হল জীবন শুরুর লগ্নে তাঁর জ্যোতিষী হওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ছিল না; অন্যের জীবনে ভবিষ্যতে কী ঘটতে চলেছে সেটা তো তিনি জানতেনই না, এমনকি তাঁর নিজের জীবনে কয়েক মুহূর্ত পরে কী হতে চলেছে, সে ধারণাও তাঁর ছিল না। নির্বোধ মক্কেলদের মতোই তিনিও তিথিনক্ষত্রের ব্যাপারে একেবারে অজ্ঞ ছিলেন।

 তথাপি তিনি যা বলতেন তা মানুষকে পরিতুষ্ট ও আশ্চর্যান্বিত করত। এগুলি ছিল তাঁর পর্যবেক্ষণ, অনুশীলন ও সুচতুর অনুমানের পরিণাম। সাধারণ মানুষের মতো একইভাবে, এটি ছিল তাঁর সৎ পরিশ্রমের ফসল এবং দিনের শেষে যে মজুরি তিনি ঘরে নিয়ে যেতেন তিনি তার সত্যিকারের দাবিদার ছিলেন।
কোনো পূর্বপরিকল্পনা বা চিন্তাভাবনা ছাড়াই তাঁকে নিজের গ্রাম ছাড়তে হয়েছিল। যদি তিনি গ্রামেই থেকে যেতেন তাহলে পূর্বপুরুষদের কাজগুলি- যেমন জমি চাষ, সাধারণ জীবনযাপন, বিবাহ করা, শস্যের মতোই ক্রমশ বয়োঃবৃদ্ধি, পৈতৃক ভিটেতে বাস-এসবই তাঁর ভবিতব্য ছিল। কিন্তু তাঁর ভাগ্যে সেটা ঘটল না। কাউকে কিছুমাত্র না জানিয়ে তাঁকে ঘর ছাড়তে হল এবং শ-দুয়েক মাইল পালিয়ে আসার আগে তাঁর থামার উপায় ছিল না। একজন গ্রামবাসীর কাছে এ দূরত্ব বড়ো কম নয়, এক সমুদ্র পার করার মতোই প্রায়।
মানবজীবনের প্রাত্যহিক সমস্যাগুলি সম্পর্কে তিনি কার্যকরী বিশ্লেষণ করতে পারতেন: বিবাহ, অর্থ এবং মানুষের মধ্যেকার। সম্পর্কের জটিলতা। বহুদিনের অনুশীলন তাঁর অনুভূতিকে তীক্ষ্ণ করে তুলেছিল। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি সমস্যা বুঝে ফেলতেন। তিনি প্রতি প্রশ্নপিছু তিন পাই করে নিতেন এবং যতক্ষণ না বস্তার দশ মিনিট কথা বলা শেষ হয় ততক্ষণ তিনি মুখ খুলতেন না, কারণ এই বক্তব্যই তাঁকে এক ডজন উত্তর ও উপদেশ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট রসদ যোগান দিত। যখন তিনি মক্কেলের সাথে কথা বলতেন, তাঁর হাতের তালুর দিকে তাকিয়ে,
"আপনি বিভিন্ন কারণে আপনার প্রচেষ্টার সর্বোচ্চ ফল পাচ্ছেন না।" দশজনের মধ্যে নয়জন মোটের উপর স্বীকার করে নিত। অথবা তিনি প্রশ্ন করতেন, "আপনার পরিবারে এমন কোনো মহিলা আছে, বা দূর সম্পর্কের আত্মীয় যার সাথে আপনার মতের মিল নেই।" বা তিনি তাঁর চরিত্রের একটা বিশ্লেষণ করতেন। "আপনার অধিকাংশ সমস্যার মূল হল আপনার স্বভাব। আপনার কপালে শনির অবস্থানের জন্য আপনি অন্য কিছু পাবেন কীভাবে? আপনার একটু উদ্দাম স্বভাব আছে এবং আপনার একটি উগ্র বহির্মুখী জীবন আছে।" এইগুলি জ্যোতিষীকে তাদের প্রিয় করে তুলত এবং হৃদয়ের কাছাকাছি নিয়ে আসত, এমনকি আমাদের মধ্যে খুব নরম স্বভাবের মানুষটিও এটা ভাবতে পছন্দ করে যে তার বাইরেটা এমন ভয়ংকর যে মানুষ তার ভেতরটা বুঝতে পারে না।

বাদাম বিক্রেতা তার মশালটা নিভিয়ে দিয়েছে এবং বাড়ি যাওয়ার জন্য উদ্যত হয়েছে। এটি ছিল জ্যোতিষীর কাছে একটি সংকেত যে, তাঁকেও গুটিয়ে নিতে হবে কারণ তিনি এরপর অন্ধকারে পড়ে যাবেন শুধুমাত্র দুর থেকে সবুজ অস্পষ্ট বিচ্ছুরিত।
আলোকরশ্মি যা তাঁর কাছে মাটি স্পর্শ করছে, এটি ছাড়া। তিনি
তাঁর কড়িগুলি তুলে নিচ্ছেন এবং অন্যান্য সরঞ্জামগুলিও তুলে নিচ্ছেন এবং তাঁর জিনিসপত্রগুলিকে তাঁর থলের মধ্যে ভরছেন। যখন সবুজ আলোটি নড়ে উঠল; তিনি চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলেন তাঁর সামনে একজন লোক এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি অনুভব করলেন যে, একজন সম্ভাব্য মক্কেল এসেছে এবং বললেন, "আপনাকে খুবই উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে। এটাই আপনার জন্য ভালো হবে যদি আপনি এখানে কিছুক্ষণ বসেন এবং আমার সাথে আলাপ করেন।" অন্যজন গজগজ করতে করতে একটি অস্পষ্ট উত্তর দিল।  জ্যোতিষী তাকে আরও কয়েকবার চাপাচাপি করতেই অন্য ব্যক্তিটি তার হাতের তালুটি জ্যোতিষীর নাকের কাছে মেলে ধরল এবং বলল, "আপনি নিজেকে একজন জ্যোতিষী বলেন?” জ্যোতিষী মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হলেন এবং সবুজ আলোয় অন্যজনের হাতের তালু পরীক্ষা করে বললেন, "আপনার স্বভাব হচ্ছে। অন্যজন বলল, "ওহ। থামুন তো। আমাকে এমন কিছু বলুন যা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বন্ধুর অহমিকায় আঘাত লাগল। "আমি প্রতি প্রশ্নে মাত্র তিন পাই নিয়ে থাকি এবং এর পরিবর্তে আপনি যা পান সেটা যথেষ্টই....."। অন্যজন তার হাতের তালু সরিয়ে নিয়ে এক আনা বের করল এবং জ্যোতিষীর দিকে ছুড়ে দিয়ে বলল, "আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করব। যদি আমি প্রমাণ করতে পারি আপনি একজন মিথ্যাবাদী আপনি অবশ্যই আমাকে সুদসহ


আমার আনা ফেরত দেবেন।"


"যদি আপনি দেখেন আমার উত্তর সন্তোষজনক তাহলে আপনি কী আমাকে পাঁচ টাকা দেবেন?"


"তাহলে আপনি আমাকে আট আনা দেবেন।"


"না"


ওই অচেনা ব্যক্তি বলল, "ঠিক আছে আপনাকে দেওয়া হবে আর যদি আপনি ভুল বলেন তাহলে আপনি দ্বিগুণ অর্থ ফেরত দেবেন।" কিছু তর্কবিতর্কের পর এই চুক্তিটি মেনে নেওয়া হল। জ্যোতিষী তখন আকাশের দিকে, অর্থাৎ স্বর্গের দিকে প্রার্থনা করলেন আর অন্যজন চুরুট ধরাল। জ্যোতিষী দেশলাইয়ের আলোয় ওই ব্যক্তির মুখের ঝলক দেখতে পেলেন। এরপর কিছুক্ষণের বিরতি কারণ গাড়িগুলি রাস্তা দিয়ে শব্দ করতে করতে যাচ্ছিল, ঘোড়ার গাড়ির চালকরা ঘোড়াগুলিকে গালাগালি দিচ্ছিল এবং ওই আলো-আঁধারি উদ্যানে (পার্কে) উত্তেজিত জনতার হট্টগোল হচ্ছিল। অন্য ব্যক্তিটি বসল, তার চুরুটটিকে টানছে আর ধোঁয়া ছাড়ছে এবং সেখানে অনড়ভাবে বসে আছে। জ্যোতিষী অস্বস্তি অনুভব করলেন। তিনি জিনিসপত্র গোটানোর প্রস্তুতি নিয়ে বললেন, "এই ফেরত নিন আপনার আনা। আমি এরকম প্রতিযোগিতায় অভ্যস্ত নই। তাছাড়া আজ আমার দেরি হয়ে গেছে।" তিনি গোছগাছ শুরু করলেন। অন্য ব্যক্তি তাঁর কবজি চেপে ধরে বলল, "আপনি তো এখন পালাতে পারবেন না। আমি যখন পেরিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আপনি আমাকে ডেকে এনেছেন।" জ্যোতিষী তার খপ্পরে পড়ে কাঁপতে লাগলেন। তাঁর গলা শুকিয়ে ক্ষীণ হয়ে আসতে লাগল। "আমাকে আজ ছেড়ে দিন। আমি আগামীকাল আপনার সাথে কথা বলব।" অন্যজন




হাতের তালুটা তাঁর মুখে ঠেলে দিয়ে বলল, "প্রতিদ্বন্দ্বিতা হল শুধুই প্রতিদ্বন্দ্বিতা। চলুন শুরু করুন।" জ্যোতিষী তাঁর কাজে যখন উদ্যত হলেন তখন তাঁর গলা শুকিয়ে আসছিল। "একজন মহিলা....."


"থামুন", অন্যজন চিৎকার করে বলল, "আমি ওসব কিছু


শুনতে চাই না। আমি আমার বর্তমান খোঁজ বা অন্বেষণে সফল হব। কিনা। এটার উত্তর দিন এবং চলে যান। অন্যথায় আমি আপনাকে যেতে দেব না যতক্ষণ না আপনি আপনার সব মুদ্রা (কয়েন) ফেরত দিচ্ছেন।" জ্যোতিষী বিড়বিড় করে কিছু মন্ত্র উচ্চারণ করলেন এবং উত্তর দিলেন, "ঠিক আছে আমি বলব। কিন্তু আপনি আমাকে এক টাকা দেবেন যদি আমার বলা কথাগুলি বিশ্বাসযোগ্য হয়? অন্যথায় আমি আমার মুখ খুলব না এবং আপনি আপনার যা ইচ্ছা করতে পারেন।" অনেকক্ষণ দরাদরি করার পর অন্যজন চুক্তিতে রাজি হল। জ্যোতিষী বললেন, "আপনাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে দেওয়া


হয়েছিল। আমি কি ঠিক বলছি?"


"আঃ, ঠিক আছে; আরও বলুন।"


জ্যোতিষী বললেন, "একটি ছুরি আপনার দেহকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে গিয়েছিল একদা?"


"ভালো লোক তো আপনি।" ওই ব্যক্তি তাঁর বুকের পোশাক খুলে দাগটি দেখিয়ে বলল "আর কী জানেন?"


"তারপর আপনাকে খেতজমির কাছে একটি কূপের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আপনাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে দেওয়া হয়েছিল।"


"আমার তো মরে যাওয়ারই কথা ছিল যদি না কোনো একজন পথিক উকি দিয়ে কুয়োতে না দেখত।" অন্যজন উদ্দীপনায় অভিভূত হয়ে বললেন "কখন তাকে আমি পাব?" সে হাত মুষ্টি করে বলল।


"অন্য জগতে", জ্যোতিষী উত্তর দিলেন। "সে অনেক দূরের


এক শহরে চার মাস আগে মারা গেছেন। আপনি তাঁকে আর কোনোভাবেই দেখতে পাবেন না।" এ কথা শুনে অন্য ব্যক্তিটি আর্তনাদ করে উঠল। জ্যোতিষী আরও বলে চললেন।
"গুরু নায়ক-"


সে বিস্মিত হয়ে বলল, "আপনি আমার নাম জানেন?"


"গুরু নায়ক, যেমন করে আমি আপনার অন্য জিনিসগুলি জানি। আমি যেগুলি বলব মন দিয়ে শুনুন। এই শহর থেকে আপনার গ্রাম উত্তর দিকে সোজা দু-দিনের রাস্তা। পরের ট্রেনটা পরুন এবং চলে যান। যদি আপনি বাড়ি থেকে অন্যত্র আর কোথাও যান তাহলে আপনার জীবনে আবার বড়ো বিপদ হবে।" জ্যোতিষী এক চিমটে পবিত্র ছাই তুলে নিয়ে তার দিকে বাড়িয়ে দিলেন। "এটাকে আপনার কপালে ঘষে নিন এবং বাড়ি চলে যান। আর কখনও আপনি দক্ষিণ মুখে যাত্রা করবেন না, তাহলে আপনি শত বছর বাঁচবেন।"


"আবার কেন আমি বাড়ি থেকে বেরোব।" চিন্তাগ্রস্ত হয়ে অন্যজন বলল। "আমি শুধুমাত্র যখন তখন বাইরে বেরোচ্ছিলাম ওই লোকটিকে খোঁজার জন্য এবং আমার সঙ্গে তাঁর দেখা হলে গলা টিপে তাকে মেরে ফেলতাম।" সে অনুতাপের সঙ্গে তার মাথাটা নাড়াল। "সে আমার হাত ফসকে পালিয়ে গেল। আমি এটুকু আশা করেছিলাম অন্ততপক্ষে সে মরবে যেমনভাবে তার মৃত্যু হওয়াটা উচিত বা প্রাপ্য।" "হ্যাঁ," জ্যোতিষী বললেন, "ওকে একটি লরি খেথঁতলে দিয়েছিল।" অন্যজন এই কথাটি শুনে বেশ তৃপ্ত হল।


ইতিমধ্যেই জায়গাটি জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল আর জ্যোতিষী তাঁর সরঞ্জামগুলি তুলে নিয়ে থলির মধ্যে ভরে নিলেন। সমস্ত এলাকাটাকে অন্ধকার ও নিস্তব্ধতায় ফেলে রেখে ওই সবুজ আলোকরশ্মিটাও নিভে গিয়েছিল। জ্যোতিষীকে একমুঠো কয়েন/ মুদ্রা দেওয়ার পরে ওই অচেনা ব্যক্তিও রাত্রির অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন।


জ্যোতিষী যখন বাড়ি পৌঁছোলেন তখন সময় মাঝরাতের


কাছাকাছি। তাঁর স্ত্রী দরজায় অপেক্ষা করছিলেন এবং বিলম্বের ব্যাখ্যা দাবি করলেন। তিনি তাঁর স্ত্রীর দিকে ওই কয়েনগুলি ছুড়ে দিলেন এবং বললেন, "গুনে দেখো, একজন আমাকে এগুলি সব দিয়েছে।"


তিনি গুনে বললেন "সাড়ে বারো আনা।" তিনি (তাঁর স্ত্রী) আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন। "আমি আগামীকাল কিছুটা গুড় এবং নারকেল কিনতে পারব। অনেকদিন ধরে আমাদের বাচ্চা মিষ্টি খেতে চাইছিল। আমি কাল তাকে কিছু পিঠে তৈরি করে দেব।"


"ওই বরাহনন্দন আমাকে ঠকিয়েছে। সে আমাকে এক টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করেছিল," জ্যোতিষী বললেন। তাঁর স্ত্রী জ্যোতিষীর দিকে তাকালেন ও বললেন, "তোমাকে উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে। কোনো সমস্যা হয়েছে?"


"কিছু না।"


নৈশভোজের পর দাওয়া-তে বসে তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন, "তুমি কী জানো আজ থেকে আমার মাথার একটি ভার নেমে গেল? আমি এতদিন ধরে ভাবতাম আমার হাতে কোনো মানুষের রক্ত লেগে আছে। সেই কারণেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এলাম, এখানে স্থিত হলাম, তোমাকে বিয়ে করলাম। কিন্তু সে জীবিত।"


তাঁর স্ত্রী খাবি খেল। "তুমি হত্যার চেষ্টা করেছিলে?"


"হ্যাঁ, আমাদের গ্রামে, তখন আমি বোকা সরল যুবক ছিলাম। একদিন আমরা মদ্যপান করেছিলাম, জুয়া খেলেছিলাম এবং ভয়ানকভাবে ঝগড়া করেছিলাম-এখন আর এসব ভাবার কী দরকার? ঘুমোনোর সময় হয়ে গেছে।" হাই তুলতে তুলতে তিনি বললেন, এবং দাওয়ার উপরে শুয়ে পড়লেন।


 #Bengali Meaning of An Astrologer's Day by R.K Narayan , 
#Bengali Meaning :An Astrologer's Day  ,An Astrologer's Day er bangla mane ,

Comments